বুকের ব্যথায় টানা ৫ দিন হাসপাতালে ভর্তি সন্ধ্যা রায়, এখন কেমন আছেন তিনি?
নিজস্ব প্রতিনিধি: দিন দুয়েক আগেই খবর এসেছে যে, অসুস্থ টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। বুকে ব্যথা নিয়ে গত শনিবার দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রবীণ অভিনেত্রী। এখন তিনি কেমন আছেন, গতকাল পর্যন্তও শোনা গিয়েছিল যে, অভিনেত্রীর অবস্থা এখনও উন্নত নয়। একাধিক পরীক্ষা করা হয়েছে তাঁর শরীরের। এখনও রিপোর্ট হাতে পাওয়া যায়নি। তিন চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন অভিনেত্রী। এখন প্রায় ৫ দিন কেটে গেল, কেমন আছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। অবশেষে জানা গিয়েছে ভাল আছেন সন্ধ্যা রায়। নতুন করে তাঁর কোনও শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানিয়েছেন। গত শনিবার বুকে অস্বস্তি এবং প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে তাঁকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছিল। বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সন্ধ্যা রায় আপাতত জরুরি বিভাগে থাকলেও ভেন্টিলেশনে নেই তিনি।
বুক ধড়ফড়ানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যাও আপাতত নিয়ন্ত্রণে এসেছে তাঁর। কৃত্রিম ভাবে অক্সিজেন দেওয়াও হচ্ছে না। খাওয়াদাওয়াও করছেন তিনি ঠিকঠাকভাবেই।অভিনেত্রীর পরিবার ছাড়া তাঁকে দেখার অনুমতি নেই অন্য কারোর। তবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও এক্ষুনি তাঁকে ছাড়া হবেনা হাসপাতাল থেকে। কয়েক দিন চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকবেন তিনি। বছরের শুরু থেকেই টলিউডে একের পর এক প্রবীণ তারকাদের স্বাস্থ্য অবনতির কথা প্রকাশ্যে এসেছে। পরিচালক প্রভাত রায়, কখনও মনোজ মিত্রের অসুস্থতার কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। এমনকী এও জানা গিয়েছিল যে, অভিনেতারা হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাঁদের দেখতে টলিউডের তেমন কেউ হাসপাতালে পৌঁছয়নি। আবার কিছুদিন আগে অভিনেত্রী উদয়শংকর চিকিৎসার খরচ জোগানোর অভাবে মারা গিয়েছেন। এছাড়াও কিছুদিন আগে প্রবীণ অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তী, এবং মাধবী মুখোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যের অবনতির কথা শুনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রীর ভক্তরা। তবে এখন তাঁরা সুস্থ। আবার এখন শোনা যাচ্ছে, সন্ধ্যা রায়ও অসুস্থ। বর্তমানে অভিনেত্রীর বয়স ৭৯ বছর।
আশি-নব্বইয়ের দশকের টলিউডের একজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ছিলেন সন্ধ্যা রায়। তাঁর অভিনীত ছোট বউ, বাবা তারকনাথ-সহ একাধিক ছবি আজও বাঙালির ইমোশন। বিশেষ করে সন্ধ্যা রায় অভিনীত ‘বাবা তারকনাথ’ ছবিটি বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় সাড়া ফেলে দিয়েছিল। এই ছবিতে বহু মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছিল তাঁর অভিনয়। প্রয়াত কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদারের স্ত্রী ছিলেন সন্ধ্যা রায়। এদিকে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ষাট, সত্তরের দশকে অনুপকুমার-সন্ধ্যা রায় জুটির জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তাঁদের জুটির প্রথম ছবি ছিল ১৯৬১-র ‘আহ্বান।’ এছাড়াও অভিনেত্রীর ঝুলিতে রয়েছে ‘হাই হিল’, ‘পলাতক’, ‘জীবন কাহিনী’, ‘আলোর পিপাসা’, ‘ঠগিনী’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’-এর মতো হিট ছবি। ২০১৪-য় অভিনেত্রী রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন। তৃণমূল কংগ্রেস দলের সাংসদ প্রার্থী হিসেবে লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। এমনকী বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সাংসদও হয়েছিলেন তিনি।