১১ ডিসেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে SLST চাকরিপ্রার্থীরা, মধ্যস্থতায় কুণাল
নিজস্ব প্রতিনিধি: ১০০০ দিন কেটে গিয়েছে রাস্তায়। কিন্তু চাকরি জোটেনি। নবম থেকে দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত SLST চাকরিপ্রার্থীদের(SLST Job Aspirants) অবস্থান অব্যাহত। শনিবার কলকাতার(Kolkata) ধর্মতলার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে সেই ধর্নামঞ্চে মাথা মুড়িয়ে প্রতিবাদ করলেন এক মহিলা SLST চাকরিপ্রার্থী। সেই সঙ্গে চাকরি চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। আবেদন করলেন, অবিলম্বে তাঁর মতো SLST চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হোক। শাসক এবং বিরোধীদের কাছে রাসমণি পাত্র নামে ওই চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন, ‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আপনারা সবাই আমাদের সমস্যার সমাধান করুন। আমাদের চাকরি দিন।’ সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এদিন দুপুরে সেই ধর্নামঞ্চে পৌঁছে গেলেন রাজ্যের শাসক দলের(TMC) রাজ্য সাধারন সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। তাঁর উপস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত বৈঠকের পরেই ঠিক হয়, আগামী ১১ ডিসেম্বর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর(Bratya Basu) সঙ্গে বৈঠক করবেন SLST চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধিরা। ৭জন প্রতিনিধি যাবেন সেই বৈঠকে যোগ দিতে।
এদিন দুপুরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে পৌঁছন কুণাল। তিনি চাকরিপ্রার্থীদের পাশে থেকে তাঁদের সঙ্গে ধর্নায় বসেন। আর তাঁকে দেখেই আন্দোলনকারীদের একাংশ ‘চোর’ লেখা পোস্টার হাতে স্লোগান তুলতে থাকেন। এঁরা সকলে বিজেপি সমর্থক বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের অন্যদের। যদিও কুণাল ঘোষ এসবকে গুরুত্ব না দিয়ে সংক্ষেপে জানান, ন্যায্য চাকরির দাবিতে আন্দোলনকারীকে নেড়া হতে দেখে তিনি এই মঞ্চে এসেছেন। তাঁদের ধর্নায় কিছুক্ষণ শামিল হতে চান বলে জানান। এই সময়েই ওই মঞ্চের কাছে ছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। তাঁর সঙ্গে কুণাল ঘোষের সাময়িক বচসাও বাঁধে। এর পর পরিস্থিতি সামলে কুণাল ঘোষ চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে ধর্নায় বসেন। কুণাল ঘোষ যাওয়ার খানিক আগেই এই মঞ্চে পৌঁছেছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি কুণালের আগমনে কার্যত খেপে ওঠেন।
কুণাল চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। সেখান থেকে তিনি ফোনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কথা বলানোর চেষ্টা করেন। তবে তাতেও নিজের দাবিতে অনড় চাকরিপ্রার্থীরা। যদিও শিক্ষামন্ত্রী আগামী সোমবার দুপুর ৩টের সময় আন্দোলনকারীদের কয়েকজন প্রতিনিধিদের ডেকে পাঠিয়েছেন। কিছু আন্দোলনকারী তাতে রাজীও হয়েছে। যদিও সাংগঠনিক ভাবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত তাঁরা নেননি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসা বা না বসা নিয়ে। কুণালও এই বিষয়ে কিছু জোর করেননি।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ২০১৬ সালের এসএলএস-টির নম্বরভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। সামনের সারির মেধাকে বঞ্চিত করে পিছনের সারির প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে। এসএমএসের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ২৯ দিন অনশন করেছিলেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও তাঁরা চাকরি পাননি— এই অভিযোগে আবার অনশনে বসেন কয়েকশো যুবক-যুবতী। ২০২১ সালে সল্টলেকে ১৮৭ দিন ধর্না দেন। তার পর গত ১০০০ দিবারাত্রি কেটেছে রাস্তায়। কিন্তু চাকরি হয়নি।