হাওড়ায় পুরভোটের ভাবনাচিন্তা শুরু রাজ্য সরকারের, খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিনিধি: এদিন অর্থাৎ সোমবার ঝালদা ও তাহেরপুর ছাড়া রাজ্যের সব পুরসভার চেয়ারম্যান ও পুরনিগমের মেয়র এবং আধিকারিকদের নিয়ে নবান্নে(Nabanna) বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই বৈঠকে ব্যতিক্রমী ভাবে হাওড়া পুরনিগমের(HMC) তরফে ডাকা হয়েছে ওই এলাকার ৫ জন বিধায়ককেও(TMC MLA)। তাঁরা সকলেই তৃণমূলের। নবান্ন সূত্রে খবর, যে হেতু হাওড়ায় নির্বাচিত পুরবোর্ড নেই, তাই নির্বাচিত বিধায়কদের ডেকেই পুর এলাকার কাজ ত্বরান্বিত করতে চাইছে রাজ্য। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, হাওড়ায় দ্রুত পুরভোট(Howrah Municipal Corporation Election) করাতে চায় রাজ্য সরকার। এখন থেকেই কার্যত তার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে হাওড়া কেন্দ্র থেকে তৃণমূল জিতলেও শহরজুড়ে নির্বাচনী প্রচারে বিরোধীরা পুর পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছিল। শাসক শিবিরও আঁচ পেয়েছে, দ্রুত পুরভোট না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আর তাই যত দ্রুত সম্ভব হাওড়ায় পুরভোটের পথে হাঁটা দিতে চাইছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
২১০১৩ সালে হাওড়া পুরনিগম এলাকায় শেষবার পুরভোট হয়েছিল। পরে বালি পুরসভাকে জুড়ে দেওয়া হয়ে হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে। বালির ৩৫টি ওয়ার্ড ভেঙে ১৬টি ওয়ার্ড গড়ে সেখানেও উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। ২০১৮ সালে সেই পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও রাজ্য সরকার ভোটের পথে এগোয়নি। বরঞ্চ রাজ্য বিধানসভায় বিল পাশ করা হয় বালিকে ফের হাওড়া পুরনিগম থেকে আলাদা করে নতুন পুরসভা হিসাবে গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু সেই বিল এখনও ফেরত আসেনি রাজভবন থেকে। রাজ্যের দাবি, রাজ্যপাল সেই বিলে সই করছেন না, ফেরতও পাঠাচ্ছেন না। আবার রাজভবনের দাবি, এই রকম কোনও বিলই আটকে রাখা হয়নি। মাঝের থেকে হাওড়া পুরনিগম আর বালি পুরসভা কোথাও পুরভোট করাতে পারছে না রাজ্য সরকার। দুই ক্ষেত্রেই প্রশাসক বসিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। কিন্তু এখন দুই শহরেই কান পাতলে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে যে, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় দুই শহরেই ব্যাপক ভাবে ধাক্কা খাচ্ছে পরিষেবা। আর তাই আগামী দিনে এই পরিস্থিতির বদল চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবারে নবান্নের বৈঠকে এই কারণেই বালি ও হাওড়ার ৫ বিধায়ককেই ডাকা হয়েছে।
এই ৫ বিধায়ক হলেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপ রায়, যুব কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা শিবপুরের বিধায়ক মনোজ তিওয়ারি, হাওড়া উত্তরের বিধায়ক গৌতম চৌধুরী, বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায় এবং হাওড়া দক্ষিণের বিধায়ক নন্দিতা চৌধুরী। বৈঠকে থাকবেন হাওড়া পুরনিগমের প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীও। এই বৈঠকে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা না হলেও পৃথক একটি বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে পুজোর আগেপরে হাওড়া পুরনিগমের ৬৬টি ওয়ার্ডে ভোট হতে পারে। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে বালিকে পৃথক পুরসভা করা হচ্ছে না। বালি থাকতে পারে হাওড়ার মধ্যেই। সেক্ষেত্রে রাজভবনের বিল নিয়ে পুরনির্বাচনের পথে কোনও বাধা থাকবে না। তবে সেই নির্বাচনের পরে সব থেকে বড় প্রশ্ন থাকবে হাওড়া পুরনিগমের মেয়র কে হবেন! এই ক্ষেত্রে দুটি নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রথমটি অবশ্যই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী অরূপ রায়ের এবং দ্বিতীয়টি হাওড়া দক্ষিণের বিধায়ক নন্দিতা চৌধুরীর। নন্দিতা তৃণমূলের প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে। তাই ধারে ভারে তিনিও মেয়র পদের জন্য এগিয়ে থাকছেন।