অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশে সায়ন্তিকাদের ধর্নায় যোগ রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের
নিজস্ব প্রতিনিধি: শপথ জটিলতা অব্যাহত। আবার রাজ্য বিধানসভা ভবন(West Bengal State Legislative Assembly) চত্বরে বি আর অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশেপ অব্যাহত রাজ্যের ২ নয়া বিধায়কের ধর্না কর্মসূচী। এদিন সেই ধর্নায় যোগ দিলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) বিধায়কেরা। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে হয়ে যাওয়া দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়(Sayantika Banerjee) এবং রায়াত হোসেন সরকারের শপথ ঘিরে তৈরি হওয়া জটিলতার জেরে তাঁরা দুইজনই বিধানসভা চত্বরে অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশে নিত্যদিন ধর্না দিচ্ছেন। এদিন অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশে দুপুর ১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত তাঁদের সেই ধর্নায় যোগ দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim), অরূপ বিশ্বাস, শশী পাঁজা(Sashi Panja), বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল বিধায়কেরা। তাঁরা প্রত্যেকেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন।
শুক্রবার ধর্নায় সায়ন্তিকার হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা ছিল, ‘রাজ্যপাল, আমরা এখনও শপথ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’ তাঁদের পাশেই ধর্নায় যোগ দেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ, শশী, অরূপ-সহ হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ, উপ মুখ্যসচেতক দেবাশিস কুমার, কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার, ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ, রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীরা। ধর্নাস্থল থেকে অরূপ রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘দুই প্রার্থী মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আর রাজ্যপাল বিজেপির রাজনৈতিক নেতা হিসাবে বিবৃতি দিচ্ছেন। ২জন বিধায়ক শপথ নিতে পারছেন না। মানুষের কাজ করতে পারছেন না। অথচ রাজ্যপাল যে ভাবে বিবৃতি দিচ্ছেন, মনে হচ্ছে, তিনি এক জন বিজেপি নেতা। প্রকাশ্যে বিজেপি করেন, রাজভবনকে বিজেপির কার্যালয় করেছেন তিনি। তাঁর কোনও নিরপেক্ষতা নেই। বাংলাকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য এ সব করছে রাষ্ট্রশক্তি। নিয়ম হল, রাজ্যপাল বিধানসভায় এসে শপথ পাঠ করাবেন। না পারলে স্পিকারকে দায়িত্ব দেবেন। কোনওটাই তিনি করছেন না। ৩দিন ধরে ধর্নায় বসেছেন ২ বিধায়ক। আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি। বাংলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় শক্তি এই লড়াই চালাচ্ছে। কী ভাবে বাংলাকে পিছিয়ে দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা চলছে। মানুষ উন্নয়ন চান। অধ্যক্ষ এই নিয়ে চিঠি লিখেছেন রাষ্ট্রপতিকে।’
নতুন নির্বাচিত ২ বিধায়কের দাবি, বিধানসভায় এসে শপথ পাঠ করিয়ে যান রাজ্যপাল। নয়তো স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারকেও শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিতে পারেন রাজ্যপাল। সায়ন্তিকা জানিয়েছেন, বাংলায় এই দিন দেখতে হচ্ছে বলে তাঁরা ‘লজ্জিত’। তবে তাঁরা কোনও মতেই রাজভবনে শপথ নিতে যাবেন না। যদিও এই শপথ বিতর্ক নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, ‘বিধানসভা সকলের জন্য নয়! শুধুই তৃণমূলের জন্য। মাননীয় অধ্যক্ষ ক্ষমতার বলে প্রথা ভেঙে বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন রাজ্যপালকে বক্তৃতা দিতে জেননি। এক যাত্রায় পৃথক ফল হয় না। স্পিকারের কার্যকালে সাংবিধানিক প্রধান তাঁর ক্ষমতার বলে রাজভবনে গিয়ে দুই বিধায়ককে শপথপাঠ করানোর কথা বলেছেন। অধ্যক্ষ ক্ষমতার বলে করলে রাজ্যপালও তা করেছেন।’