জাফিকুলের বাড়ি থেকেও কার্যত হতাশ হয়েই বেরোলেন CBI আধিকারিকেরা
নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথমে বেশ বজ্র আঁটুনি। পরে শেষে কিনা হয়ে গেল ফস্কা গেরো। পর পর দুই দিনের ঘটনা বলে দিচ্ছে, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে(School Teachers Recruitment Scam) নেমে ঘোলা জলে মাছ খুঁজে বেড়াচ্ছেন CBI আধিকারিকেরা। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাঁদের হাতে প্রায় কিছুই আসছে না। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার CBI আধিকারিকেরা হানা দিয়েছিলেন তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাসগুপ্ত এবং দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়িতে। কিন্তু দুই জায়গা থেকেই তাঁদের খলাই হাতে ফিরতে হয়েছে। ওই দুই কাউন্সিলরের পাশাপাশি গতকাল মুর্শিদাবাদ জেলার(Murshidabad District) ডোমকলের(Domkal) তৃণমূল বিধায়ক(TMC MLA) জাফিকুল ইসলামের(Jafikul Islam) বাড়িতেও হানা দেন CBI আধিকারিকেরা। কিন্তু এদিন সকালে সেখান থেকেও কার্যত তাঁদের খালি হাতেই বেড়িয়ে আসতে হয়েছে।
প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন CBI আধিকারিকেরা। গতকাল দুপুরেই জানা গিয়েছিল, বিধায়কের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধার হয়েছে। সেই নগদ টাকা গোনার জন্য মেশিনও নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এদিন অর্থাৎ শুক্রবার সকালে CBI আধিকারিকেরা চলে যেতে জানা যায়, মাত্র ৩৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে বিধায়কের বাড়ি থেকে। সেই টাকার একাংশ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলেই সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু গয়নাও বাজেয়াপ্ত হয়ে থাকতে পারে, যদিও তার পরিমাণ ঠিক কত তা জানা যায়নি। বিধায়কের বাড়ির শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছে মাত্র ৯০ হাজার টাকা। বেডরুম থেকে মিলেছে ২৪ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও বাড়ির অন্যান্য ঘর থেকে আরও কয়েক লাখ টাকা মিলেছে। সব মিলিয়ে বিধায়কের বাড়ি থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলেই দাবি। যদিও এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের তরফে প্রকাশ্যে বা সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। উদ্ধার হওয়া নগদ অর্থের মধ্যে কতটা সিবিআই আধিকারিকেরা নিয়ে বেরিয়েছেন, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়। সিবিআই কর্তারাও এখনও সে ব্যাপারে কিছু জানাননি।
নগদ অর্থ ছাড়াও জাফিকুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্কের নথি, বাড়ির দলিল বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। জাফিকুলের স্ত্রী বীণা সরকারের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু সোনার গয়নার হদিস মিলেছে। ওই সূত্রের দাবি, বীণা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, কলেজের অধ্যক্ষা হিসেবে তিনি যে বেতন পান, সেখান থেকেই এই সোনা কেনা। যদিও সেই সংক্রান্ত কোনও নথি এখনও তিনি দেখাতে পারেননি। সিবিআই সূত্রে খবর, এ ছাড়াও দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে বিধায়কের পরিবার সূত্রে খবর, সম্প্রতি কিছু সম্পত্তি বিক্রি করা হয়েছে। সেই টাকাই তাঁদের বাড়িতে ছিল। এ ছাড়াও বিধায়কের বিএড কলেজের বিভিন্ন কর্মচারীদের বেতন বাবদ কিছু টাকা বাড়িতে ছিল। উদ্ধার হওয়া বেশির ভাগ টাকার উৎসের হিসাব রয়েছে তাঁদের কাছে। উদ্ধার হওয়া কিছু টাকার নথি জাফিকুলের ভাই জাহাঙ্গির বিশ্বাসের ছেলে মেহবুব আলমের কাছে রয়েছে। সেই সব নথিও খতিয়ে দেখেছেন সিবিআই আধিকারিকেরা।