আধার কার্ড নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব
নিজস্ব প্রতিনিধি: আচমকাই কোনও কারণ ছাড়াই রাজ্যে বাতিল হয়ে যাচ্ছে বহু মানুষের আধার কার্ড। ঘরে আসছে আধার কার্ড ডি-অ্যাক্টিভেটের(Aadhaar Card De-Activativation) চিঠি। সেই বিষয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। একাধিক দফায় তিনি সেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই কথা মাথায় রেখেই আধার বাতিল প্রসঙ্গে এদিন অর্থাৎ সোমবার বিকালে রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসকদের(District Magistrates) সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে বসছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব(Chief Secretary of West Bengal) বি পি গোপালিকা(B P Gopalika)। এদিন বিকেল ৫টা নাগাদ সেই বৈঠক বসতে চলেছে নবান্নে।
গতকালই বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ি থেকে আধার কার্ড নিয়ে রাজ্যবাসী ও নিজের উদ্বেগের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। কার্যত নরেন্দ্র মোদি সরকারের CAA, NRC ও আধার কার্ড নীতি নিয়ে সরব হন তিনি। সিউড়ির সভা থেকে রীতিমত মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি জানিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আধার যতই বন্ধ করুক, রাজ্যের একজনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না। আমরা সেই পরিষেবা দেব।’ আসলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মানুষের আধার আচমকাই নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। কখনও কখনও আধার কার্ড ‘বন্ধ’ হয়ে যাওয়ার পর আসছে চিঠি। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। আধার কার্ড যদি কাজ না করে, কোনও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধাই তাঁরা পাবেন না, এমন আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে আমজনতার মধ্যে। এমনকী বহু ক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যাবে রেশনও। আম জনতার এই হয়রানি ও আতঙ্কে প্রবল ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। এর পিছনে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চক্রান্তও দেখছেন তিনি। তবে বাংলার মানুষের উদ্বেগের কারণ নেই বলেও আশ্বস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গতকালই তিনি জানিয়েছেন, ‘কোন অধিকারে কাউকে না জানিয়ে ওরা আধার লিঙ্ক কাটছে? ওরা যাই করুক, আমি পরিষ্কার বলছি, আধার থাকুক বা না থাকুক, রাজ্যের কোনও ব্যাক্তির পরিষেবা বন্ধ হবে না। ভয় পাবেন না। আমি আছি। এটা আসলে বাংলার মানুষকে প্যাঁচে ফেলার নতুন কৌশল। মানুষ যাতে সরকারি পরিষেবা না পান, সেই লক্ষ্যেই এমন ব্যবস্থা।’ তবে এর পাশাপাশি গতকাল তিনি এটাও জানিয়েছেন যে, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি পরিষেবা দিতে অস্বীকার করলে রাজ্য সরকার বিকল্প ব্যবস্থা নেবে। সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে মানুষের সুবিধা সেক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত করব।’ এরপরেই মঞ্চে উপস্থিত রাজ্যের মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকাকে তিনি নির্দেশ দেন যে আধার বাতিলের সমস্যা সামাল দিতে একটি পোর্টাল চালু করতে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘পোর্টাল তৈরি করুন। যাদের আধার কার্ড বাতিল হচ্ছে, তাঁরা সেখানে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করবেন। আর সেই তালিকা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে রাজ্য।’ নবান্নে সূত্রে খবর সেই পোর্টাল তৈরি ও চালুর সঙ্গে জেলাস্তরে এই সমসস্যা কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে তা ঠিক করতেই এদিন বিকালে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব।