‘হলফনামা দেখে জনস্বার্থ মামলা মনে হয়নি’, মমতার বিরুদ্ধে মামলা খারিজ হাইকোর্টের
নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) বড় ধাক্কা খেয়ে গেল গেরুয়া ব্রিগেড। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী(Chief Minister of West Bengal) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা খারিজই করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু তাই নয়, মামলাটি যে কোনওভাবেই জনস্বার্থ মামলা নয় বা তা হতে পারে না, সেটাও এদিন আদালত জানিয়ে দিয়েছে। এমনকি আদালত মামলাকারীদের পরামর্শও দিয়েছে, এই রায় পছন্দ না হলে তাঁরা অন্য কোনও আদালতে যেতে পারেন। আর এই মামলাকারীরা যে সে কেউ নয়। মামলাকারী হল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ(Viswa Hindu Parishad)। আর সেটাই এখন গেরুয়া ব্রিগেডের কাছে বড় ধাক্কা হয়ে নেমে এল। সাধুদের নিয়ে মন্তব্যের জেরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল সেটাই এদিন খারিজ করে দিয়ে গেরুয়া ব্রিগেডকে ধাক্কা দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
লোকসভা নির্বাচনের মাঝে আরামবাগে একটি জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েক জন সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু মন্তব্য করেছিলেন। বিশেষত, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের(Bharat Sevasram Sangha) কার্তিক মহারাজের(Kartik Maharaj) নাম উল্লেখ করেন তিনি। মমতা বলেছিলেন, ‘সব সাধু সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান?’ এরপরেই নির্দিষ্ট করে কার্তিক মহারাজকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই এই যে বহরমপুরের এক জন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না।’ মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার আর্জিও জানানো হয় তাঁদের তরফে।
বিষয়টি নিয়ে সরব হন কার্তিক মহারাজও। বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কোনও সারবত্তা নেই। ওই বক্তব্যে তাঁর ‘মানহানি’ হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন কার্তিক মহারাজ। তবে, এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সমস্ত সন্ন্যাসীদের নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। একজন নির্দিষ্ট সাধুকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন তিনি। সন্ন্যাসীদের আঘাত করে তিনি কিছু বলতে চাননি। আর এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাজ্ঞানমের পর্যবেক্ষণ, ‘এটা পুরনো গল্প। অন্য আদালতে যেতে পারেন। হলফনামা দেখে জনস্বার্থ মামলা মনে হয়নি। অন্য কোনভাবেও অভিযোগ জানাতে পারেন।’ এখন প্রশ্ন, যে মামলা কলকাতা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে সেই মামলা নিয়ে কী সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে কোনও লাভ হবে! ভাবছে গেরুয়া ব্রিগেডও।