বাস ধর্মঘটের জেরে চরম ভোগান্তি মুর্শিদাবাদের জনতার
নিজস্ব প্রতিনিধি: হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার তার বাস্তবায়ন ঘটল। ২৪ ঘণ্টার বেসরকারি বাস ধর্মঘটের(Private Bus Strike) জেরে সোমবার চূড়ান্ত ভোগান্তির মুখে পড়লেন মুর্শিদাবাদের(Murshidabad) মানুষজন। ভোগান্তির শিকার হলেন বীরভূম, নদিয়া, মালদা ও পূর্ব বর্ধমানের জনতাও। বরাবরই বাস রুটে বেআইনি অটো-টোটো সহ নানা যাত্রিবাহী যান চলাচলের অভিযোগ তুলে এসেছেন বাস ব্যবসায়ীরা(Bus Owners)। সে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করার দাবি তুলেছেন বারবার। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। এর জেরেই গত ২৪ তারিখ ‘মুর্শিদাবাদ বাস ওনার্স কাউন্সিল’(Murshidabad Bus Owners Council) বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয় ২৭ তারিখ অর্থাৎ এদিন তাঁরা ২৪ ঘন্টার জন্য ধর্মঘটের পথে যাবেন। সেই মতো এদিন মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে যে সব বেসরকারি বাস ছাড়ে তার একটিও এদিন রাস্তায় নামেনি। সার দিয়ে জেলার সব বাসস্ট্যান্ডে সেই সব বাসকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আর তার জেরেই চূড়ান্ত ভোগান্তির মুখে পড়েন জেলার মানুষজন।
মুর্শিদাবাদের বাস ব্যবসায়ীরা এদিন জানিয়েছেন, টোটো ও অটোর দাদাগিরির প্রতিবাদে তাঁদের ব্যবসা ডুবে যাচ্ছে। জেলা জুড়ে বিভিন্ন বাস রুটে বেআইনিভাবে টোটো, অটো সহ যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করছে। যার জেরে বাসে যাত্রী হচ্ছে না। তাই তাঁরা একদিনের জন্য বেসরকারি বাস পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পরেও প্রশাসন পদক্ষেপ না করলে ১০ ডিসেম্বর থেকে তাঁরা লাগাতার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন। এই বক্তব্য জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদ বাস ওনার্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার অধিকারী। তিনি এটাও জানিয়েছেন এদিনের ধর্মঘট শুরু হ্যেছে সকাল ৬টা থেকে যা চলবে আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। তারপর যথারীতি রাস্তায় বেসরকারি বাস নামবে। আর এই বাস ধর্মঘটের জেরে এদিন রাস্তায় কাজে বেড়িয়ে চূড়ান্ত ভোগান্তিতে পড়েন বহু মানুষ। শুধু মুর্শিদাবাদের মানুষই নয়, এই বাস ধর্মঘটের জেরে এদিন ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়েন বীরভূম, নদিয়া, মালদা ও পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দারাও। কলকাতায় কাজে আসা মানুষেরাও আটকে পড়েছেন।
এদিন মুর্শিদাবাদের রাস্তায় সরকারি বাসের দেখা মিলেছে অবশ্য। কিন্তু যাত্রী ভিড়ে তাতে পা রাখা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মুর্শিদাবাদ থেকে সড়কপথে অন্য জেলায় কাজে যেতে ব্যাপক অসুবিধার মুখে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। তবে যাদের দাপটের বিরুদ্ধ এদিন বাস ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, দেখা যাচ্ছে সেই ধর্মঘটের জেরে তাঁদেরই পকেট ভরেছে। বাস মালিকদের ডাকা ধর্মঘটে আদতে পোয়াবারো হয়েছে অটো ও টোটো চাল্কদেরই। তাঁরা এদিন দিনভর বাস রুটের দূরের পথ, কাছের পথ, কার্যত রিজার্ভে চার পাঁচগুণ ভাড়ায় নিয়ে যাচ্ছেন। এদিন রাস্তায় বেড়িয়ে বেকায়দায় পড়ে যাত্রীরাও টোটো ও অটো যা ভাড়া চাইছে, তাই দিয়ে দিচ্ছেন। আদতে বাস ধর্মঘটে পকেটের বেশি টাকা খসছে যাত্রীদের আর উলটে এক দিনেই ফুলে ফেঁপে উঠেছে অটো ও টোটো চালকদের রোজগার।