জমির তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে ৮ দফার নির্দেশিকা জারি রাজ্যের
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের সরকারি জমি(Government Land) বেহাত হয়ে যাচ্ছে। চুরি(Theft) হয়ে যাচ্ছে। আর সেখানে মাথা তুলছে ইমারত। কোথাও বার তা প্লটে প্লটে ভাগ করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়েই সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। শুধু তাই নয়, যেভাবে সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে, বেহাত হচ্ছে তাতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী সরিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের ভূমি রাজস্ব দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব(Land Revenue Secretary) পদে থাকা রাজ্যেরই অর্থসচিব মনোজ পন্থকে। ভূমি রাজস্ব দফতরের নতুন সচিব হয়েছেন বিবেক কুমার। আর তার পরে পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নবান্ন(Nabanna) থেকে জারি হল ৮ দফার নির্দেশিকা। রাজ্যজুড়ে জমির তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার যে কাজ চলছে, সেই কাজ করতে গেলে কী কী মানতে হবে সেটাই বলে দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
জানা গিয়েছে, নির্দেশিকায় প্রথমেই বলা হয়েছে, রাজ্যের সরকারি জমির তথ্যভাণ্ডার তৈরি করতে Google Form ব্যবহার করতে হবে। যে ৮ দফা নির্দেশিকা জারি করা হচ্ছে, সেগুলি মেনে তা Google Form-এ নথিভুক্ত করতে হবে। মনোজ পন্থ জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, কত সরকারি জমি রয়েছে এবং খাস জমির পরিমাণ কত তা ব্লক ভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। ফর্মে সরকারের বিভিন্ন দফতরের জমি কত রয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে। প্রতিটি জমিতে গিয়ে নিজের চোখে দেখে ভেরিফিকেশন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে আধিকারিকদের। জমির নথি পাওয়া গেলে তা উল্লেখ করতে হবে ফর্মে। জানাতে হবে ওই জমি জবরদখল মুক্ত কি না, আদালতে কোনও মামলা রয়েছে কিনা, তাও। সে সব তথ্য সরকারি জমির তথ্য ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে যথাযথ ভূমিকা নেবে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সরকারি জমির বর্তমান অবস্থান লগবুক তৈরি করে তাতে উল্লেখ করতে হবে। এমনকী, সরকারি জমি, জলাশয়ের বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ছবিও তুলে তা লগবুকে রাখতে হবে যাতে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠলে জবাব মেলে লগবুক থেকেই। পাশাপাশি সরকারি জমিতে সাইনবোর্ড বসিয়ে বড় বড় হরফে লিখে দিতে হবে ‘এই জমির মালিক রাজ্য সরকার’, যাতে তা সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে। আবার কেউ সেই জমি দখল বা অপব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে যাতে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া যায় সেই রাস্তা করে রাখতে বলা হয়েছে। নবান্নে প্রতিদিনই জমি নিয়ে কয়েকশো অভিযোগ জমা পড়ে। জলাশয়,পুকুর ভরাট থেকে বেআইনিভাবে জমির চরিত্র বদল, বেআইনি বালি খাদানের অভিযোগও আসে। সবক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় ওঠে ভূমি সংস্কার ও রাজস্ব দফতর। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, Land Record Update হচ্ছে না। বহু জমি আছে যার কোনও রেকর্ড নেই। এরই সুযোগ নিচ্ছে জমি মাফিয়ারা। এজন্য আধিকারিকদের সরেজমিনে তদন্ত করে জমি কার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তা খতিয়ে দেখে রেকর্ড আপডেট করতে হবে। এতদিন কোনও কিছুই কার্যকর হয়নি। এবার মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তায় এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।