পঞ্চায়েতের টাকা খরচের ক্ষেত্রে গাইডলাইন বেঁধে দিল রাজ্য
নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েতের টাকা খরচের ক্ষেত্রে রাজ্যে ‘অনিয়ম’ বাড়ছে, কেন্দ্রের তরফে বারবার এই অভিযোগ খাড়া করা হচ্ছে। আর সেই অভিযোগকে অজুাহত বানিয়ে রাজ্যের বকেয়া আটকে রাখার নিত্যনতুন ফিকির খোঁজা চলছে। সেই আবহেই এবার কড়া পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। পঞ্চম West Bengal State Finance Commission’র বরাদ্দ অর্থ কীভাবে এবং কোথায় খরচ করতে হবে(How and where to spend the Allocated Money), তা নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেওয়া হল। নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, আর্থিক শৃঙ্খলা আর স্বচ্ছতা আনতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর(West Bengal State Panchayat Department) এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি এবং গাইডলাইনও প্রকাশ করেছে। আগে কেন্দ্রের পাঠানো Finance Commission’র বরাদ্দ ‘টায়েড’ এবং ‘আনটায়েড’ ফান্ডে বিভক্ত করে কাজ করা হতো। রাজ্যের Finance Commission’র ক্ষেত্রে তা চালু ছিল না। কিন্তু এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের Finance Commission’র টাকা খরচের ক্ষেত্রেও বরাদ্দ অর্থ ‘টায়েড’ এবং ‘আনটায়েড’ ফান্ডে ভাগ করে কাজ করার নির্দেশিকা জারি করে দিল।
রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকদের দাবি, রাজ্য Finance Commission’র টাকা ‘টায়েড’ এবং ‘আনটায়েড’ ফান্ডে বিভক্ত করা দেওয়ার ফলে এবার থেকে আর একটি নির্দিষ্ট খাতের টাকা কোনওভাবেই অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কার্যত সেই নিয়ম মেনেই এবার রাজ্য Finance Commission’র দেওয়া প্রায় ১৬০০ কোটি টাকায় এবার বাজেট তৈরি করেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। রাজ্যের সব জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির কাজকর্মের জন্যই এই টাকা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের প্রকাশিত গাইডলাইনে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, রাজ্য Finance Commission’র দেওয়া টাকায় গ্রামে Eco Tourism Park, Model Village এবং Home Stay তৈরি করতে হবে। সৌর বিদ্যুতের প্রচলন বাড়াতে হবে এবং ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পও শুরু করতে হবে। এছাড়াও তৈরি করতে হবে Bio Diversity Park। পাশাপাশি গ্রামে গ্রামে স্থায়ী সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রেও দিতে হবে জোর। তার জন্য বাজার, দোকান, অনুষ্ঠান বাড়ি, পার্কিং লট ও ফেরিঘাটের উন্নতি ইত্যাদি কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জোর দিতে বলা হয়েছে কঠিন বর্জ্য নিষ্কাষণের পরিকাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রেও। সেই সঙ্গে আদিবাসী মানুষ ও তাঁদের এলাকার উন্নয়ন, নারী ও শিশুদের উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ, স্থানীয় এলাকার চাহিদা অনুযায়ী আনটায়েড ফান্ড খরচ করা যাবে বলে গাইডলাইনে বলে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য কমিশনের অর্থ কীভাবে এবং কতটা খরচ করা হচ্ছে, সেটা নজর রাখবে নবান্ন। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরকে ত্রৈমাসিক খরচের রিপোর্ট নিয়মিত পাঠাতে হবে প্রতিটি পঞ্চায়েতগুলিকে। সেটা দেখে সন্তুষ্ট হলে তবেই পরবর্তী টাকা মিলবে। সঠিক ভাবে অর্থ খরচের জন্যই এই নতুন নিয়ম লাগু করা হচ্ছে। এরফলে আর অনিয়মের অভিযোগও উঠবে না।