শহরতলিতে বাড়ছে Mutation ছাড়াই Flat বিক্রির প্রবণতা
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বুকে এমন কয়েকশো এলাকা আছে যা খাতায় কলমে গ্রাম পঞ্চায়েত(Gram Panchayat) হলেও কার্যত শহরের চেহারা নিয়েছে। রাজ্যের জেলায় জেলায় থাকা নানা পুরসভা এলাকার পার্শ্ববর্তী জায়গায় এবং ব্লক টাউনগুলির ক্ষেত্রে এই ছবি দব থেকে বেশি দেখা যায়। ওই সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে, শহরের মতোই ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে এবং সেই সব ফ্ল্যাট কোনও Mutation ছাড়াই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। দিন কে দিন এই প্রবণতা বেড়ে চলায় এখন বহু ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়ছেন ওই সব Flat’র ক্রেতা থেকে রাজ্যের ভূমি দফতরও। কেননা দেখা যাচ্ছে, Mutation না হওয়ায় যেমন Flat’র ক্রেতারা ব্যাঙ্ক ঋণ পেতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়ছেন তেমনি রাজস্ব হারাচ্ছে ভূমি দফতরও।
রাজ্যজুড়ে দেখা যাচ্ছে বাণিজ্যিক কারণে বা যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অনেক গ্রামই দ্রুত নগরায়ণের মুখ দেখছে। বাড়ছে লোকসংখ্যা, ঘরবাড়ি, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে Flat-ও। সাধারণর রাজ্যে পঞ্চায়েত এলাকায় ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে Mutation করতে পারে একমাত্র ভূমি দফতর(Land Department)। কিন্তু তাতে ঝামেলা বেশি থাকায় Mutation ছাড়াই লক্ষ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কেনাবেচা হচ্ছে ওই সব এলাকায়। রাজ্যের পুরসভা এলাকায় গড়ে ওঠা আবাসন বা Flat’র ক্ষেত্রে Mutation করতে পারে স্থানীয় পুরসভা। এ ক্ষেত্রে প্রোমোটারের কাছ থেকে কেউ যখন ফ্ল্যাট কেনেন, তখন ক্রেতার নামে যেমন দলিল হয়, তেমনই সেই দলিলের ভিত্তিতে পুরসভা ক্রেতার নামে ফ্ল্যাট রেকর্ড করে দেয়। এর জন্য পুরসভা ০.৪ শতাংশ হারে রাজস্ব(Tax) নেয়। কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েতের হাতে সেই ক্ষমতা নেই। সেখানে কেউ ফ্ল্যাট কিনলে প্রোমোটার ক্রেতাকে রেজিস্ট্রি করে দেন। কিন্তু ক্রেতা যদি সেই ফ্ল্যাট তাঁর নামে রেকর্ড করাতে চান, সেটা পারেন না। কারণ, জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত কোথাও Mutation হয় না। একমাত্র ভূমি দফতরই তা করতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রোমোটার ফ্ল্যাট-মালিকদের নামে মিউটেশন করাতে রাজি হন না।
প্রোমোটারদের যুক্তি, তাঁরা ছাদ বিক্রি করছেন, জমি বিক্রি করছেন না। আবার ক্রেতাদের অভিযোগ, Mutation করানোর জন্য এ সংক্রান্ত শুনানিতে ভূমি দফতরে প্রোমোটাররা বেশির ভাগই যেতে রাজি হন না। আর সেই Mutation না-করানোর ফলে ভূমি দফতর বহু টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে প্রতি বছর। পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও আবাসন তৈরির জন্য অনুমতি দিতে হলে জেলা পরিষদ থেকে দেখে নেওয়া হয় প্রোমোটার সেই জমির দলিল ও রেকর্ড যথাযথ দিয়েছেন কিনা। আবাসন তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়াররা গিয়ে দেখে আসেন নকশা অনুযায়ী নির্মাণকাজ হয়েছে কি না। কিন্তু যারা ফ্ল্যাট কেনেন, তাঁদের Mutation করতে পারে ভূমি দফতর। কিন্তু বেশির ভাগ ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রেই সেটা হয় না। দেখা যাচ্ছে সেখানে প্রোমোটাররা ক্রেতাকে দলিল রেজিস্ট্রি করে দিয়ে দিচ্ছেন।