সুস্থ সন্ধ্যা রায়, ছ'দিন পর হাসপাতাল থেকে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি: টানা ৬ দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। গত শনিবার বুকে ব্যথা নিয়ে আচমকাই দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সন্ধ্যা রায়। তাঁর অসুস্থতার খবরে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন অভিনেত্রীর ভক্তকুল। গত শনিবার বুকে অস্বস্তি, ঘনঘন শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। আর ভর্তির পরেই তাঁকে হাসপাতালেন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (ICU) ভর্তি করানো হয়। এরপর একাধিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় তাঁর। জানা যায়, অভিনেত্রীর বুকের সমস্যা এখনও কমেনি। তাই তিন চিকিৎসকের একটি দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন অভিনেত্রী। দিন কয়েক আরও থাকতে হবে তাঁকে। অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন সন্ধ্যা রায়। গত শনিবার, ১৫ জুন হঠাৎই বুকে অস্বস্তি অনুভব করেন অভিনেত্রী। সে দিন থেকেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। কিন্তু অভিনেত্রীর বাড়ির সদস্যরা চাননি যে, তাঁর অসুস্থতার কথা প্রকাশিত হোক।
দিন কয়েক আগে একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জানিয়েছিলেন যে, জরুরি বিভাগে চিকিসাধীন থাকলেও ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন নেই না বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর। তাঁর বুক ধড়ফড়ানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা এখন নিয়ন্ত্রণে। কৃত্রিম ভাবে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজনও হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই খাওয়াদাওয়া করেছেন তিনি। তাই এদিন তাঁর শরীর সম্পূর্ণ স্থিতিশীল থাকায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বছরের শুরু থেকেই টলিউডে একের পর এক প্রবীণ তারকাদের স্বাস্থ্য অবনতির কথা প্রকাশ্যে এসেছে। পরিচালক প্রভাত রায়, কখনও মনোজ মিত্রের অসুস্থতার কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। এমনকী এও জানা গিয়েছিল যে, অভিনেতারা হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাঁদের দেখতে টলিউডের তেমন কেউ হাসপাতালে পৌঁছয়নি। আবার কিছুদিন আগে অভিনেত্রী উদয়শংকর চিকিৎসার খরচ জোগানোর অভাবে মারা গিয়েছেন। এছাড়াও কিছুদিন আগে প্রবীণ অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তী, এবং মাধবী মুখোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যের অবনতির কথা শুনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রীর ভক্তরা। তবে এখন তাঁরা সুস্থ। আবার এখন শোনা যাচ্ছে, সন্ধ্যা রায়ও অসুস্থ। বর্তমানে অভিনেত্রীর বয়স ৭৯ বছর।
আশি-নব্বইয়ের দশকের টলিউডের একজন দাপুটে অভিনেত্রী ছিলেন সন্ধ্যা রায়। তাঁর অভিনীত ছোট বউ, বাবা তারকনাথ-সহ একাধিক ছবি আজও বাঙালির ইমোশন। বিশেষ করে সন্ধ্যা রায় অভিনীত ‘বাবা তারকনাথ’ ছবিটি বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় সাড়া ফেলে দিয়েছিল। এই ছবিতে বহু মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছিল তাঁর অভিনয়। প্রয়াত কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদারের স্ত্রী ছিলেন সন্ধ্যা রায়। এদিকে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ষাট, সত্তরের দশকে অনুপকুমার-সন্ধ্যা রায় জুটির জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তাঁদের জুটির প্রথম ছবি ছিল ১৯৬১-র ‘আহ্বান।’ এছাড়াও অভিনেত্রীর ঝুলিতে রয়েছে ‘হাই হিল’, ‘পলাতক’, ‘জীবন কাহিনী’, ‘আলোর পিপাসা’, ‘ঠগিনী’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’-এর মতো হিট ছবি। ২০১৪-য় অভিনেত্রী রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন। তৃণমূল কংগ্রেস দলের সাংসদ প্রার্থী হিসেবে লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। এমনকী বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সাংসদও হয়েছিলেন তিনি।