শিক্ষককে স্কুলে তালাবন্দি করলেন গ্রামবাসীরা, নেপথ্যে চাল চুরি
নিজস্ব প্রতিনিধি: এ কেমন শিক্ষক যে খুদে পড়ুয়াদের খাবারের চাল চুরি করে! এই প্রশ্নটাই উঠে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার বারাসত সদর মহকুমার দেগঙ্গা(Deganga) ব্লকের চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজুকবেড়িয়া গ্রামে। কেননা সেখানে Mid Day Meal’র চাল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে গিয়েছেন স্কুলেরই শিক্ষক। আর সেই ঘটনার জেরে ওই শিক্ষককে স্কুলের মধ্যেই তালাবন্দী করে রাখেন ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা। চলে মারধরও। হয়। পরে দেগঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও এক শিক্ষককে আটকে রাখেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতি দিন ৪০ থেকে ৫০ জন ছাত্রছাত্রী উপস্থিত দেখিয়ে এই দুই শিক্ষক মিলে Mid Day Meal’র চাল চুরি করে চলেছিলেন। অথচ যে স্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে ২০-২৫জনের বেশি পড়ুয়াই নেই।
জানা গিয়েছে, রাজুকবেড়িয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের(Rajukberia Government Primary School) ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক(Assistant Head Master) সমীরকুমার দে দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল থেকে Mid Day Meal’র চাল চুরি করে যাচ্ছিলেন। তাঁকে এই কাজে সাহায্য করেন ওই স্কুলেরই আরেক সহ-শিক্ষক(Assistant Teacher) চৈতন্য পাল। দুইজনের বিরুদ্ধেই পড়ুয়াদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। এর জেরেই শনিবার গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে স্কুলে চড়াও হন। আর তখনই তাঁরা স্কুলের শৌচালয়ে প্রায় ২৫ কেজির মতো চাল খুঁজে পান। গ্রামবাসীদের দাবি, দুই শিক্ষক যদি চাল চুরির সঙ্গে জড়িতই না হয় তাহলে শৌচালয়ে চাল লুকিয়ে রাখবেন কেন? এরপরেই তাঁরা দুইজন শিক্ষককেই ওই শৌচাগারেই তালাবন্দী করে রাখেন।
খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় পুলিশ। তাঁরাই দুই শিক্ষককে উদ্ধার করেছেন। পুলিশের সামনেই গ্রামবাসীরা Mid Day Meal’র খাতা দেখতে চান। সেই খাতায় যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তা দেখে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে মারধর করেন তাঁরা। যদিও চৈতন্য পাল অভিযোগ করেছেন, তাঁর সই জাল করে দিনের পর দিন ওই স্কুল থেকে চাল চুরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। আর তা করছেন সমীরকুমার দে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি, ওই দুই শিক্ষককে বদলি করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি করেছেন।