For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

চোপড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে হামিদুলের ব্যাখ্যা তলব করল তৃণমূল

এদিন বিকালে সামনে আসে যে দলের তরফে হামিদুলকে শোকজ করা হয়েছে। যদিও হামিদুল জানিয়েছেন, তিনি এ ধরনের কোনও চিঠি পাননি।
05:46 PM Jul 02, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
চোপড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে হামিদুলের ব্যাখ্যা তলব করল তৃণমূল
Courtesy - Twitter and Google
Advertisement

নিজস্ব প্রতিনিধি: চোপড়ার ঘটনা(Chopra Incident) নিয়ে এবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেলেন তৃণমূল বিধায়ক(TMC MLA) হামিদুল রহমান(Hamidul Rahaman)। দলের গোটা ঘটনা এবং তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। কেন এই ঘটনা ঘটল? জেসিবি কে এবং তার সঙ্গে হামিদুলের কী সম্পর্ক? কেন হামিদুল নির্যাতিতাকে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ শানিয়েছেন? কেন তিনি সংবাদমাধ্যমে ‘ইসলামিক রাষ্ট্র’ হিসাবে বাংলা বা ভারতকে তুলে ধরেছেন, এই সবই হামিদুলের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। যেহেতু চোপরার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জেসিবি গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে এবং চোপড়া থানার আইসিকে শোকজ করা হয়েছে, তাই বিজেপির পক্ষে এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য বা জাতীয় স্তরের ঘটনা নিয়ে খুব বেশি ঝড় তোলা সম্ভব নয়। সেটা তাঁরা চেষ্টা করেও করতে পারছে না। কিন্তু প্রশ্ন হামিদুলের মন্তব্য ও তাঁর মানসিকতা নিয়ে। যেভাবে নির্যাতিতার পাশে না দাঁড়িয়ে তিনি তাঁকে আক্রমণ করে গিয়েছেন তাতে দলের অন্দরেই তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের নানা গ্রুপ থেকেও হামিদুলের বিরুদ্ধে দলীয়ে নেতৃত্বকে পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

Advertisement

চোপড়ার ঘটনা সামনে আসার পরে পরে রাজ্যের প্রথম শ্রেনীর এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া বার্তায় হামিদুল  বলেছিলেন, ‘আমরা ঘটনার নিন্দা জানাই। কিন্তু মহিলাটিও অন্যায় করেছেন। তিনি তাঁর স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে ছেড়ে শয়তান জানোয়ারে পরিণত হন। মুসলিম রাষ্ট্র অনুযায়ী কিছু নিয়ম ও ন্যায়বিচার আছে। যাইহোক, আমরা একমত যে যা ঘটেছে তা অনেকটা চরম ছিল। এখন এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ হামিদুলের সেই বিবৃতি সামনে আসার পরে পরেই প্রশ্ন উঠে যায় যে, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসাবে হামিদুর কীভাবে একজন নির্যাতিতাকে ‘শয়তান জানোয়ার’ আখ্যা দেন? একজন মহিলা তিনি বিবাহিত বা অবিবাহিত যাই হোন না কেন, তিনি নিঃসন্তান বা সন্তানবতী যাই হোন না কেন, সধবা বা বিধবা যাই হোন না কেন, তিনি ঠিক কাজ করেছেন না ভুল কাজ করেছেন তা বিচার করার দায়িত্ব আদালতের। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কীভাবে হামিদুর তাঁকে ‘শয়তান জানোয়ার’ আখ্যা দেন? যে দেশের রাষ্ট্রপতি একজন মহিলা, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা, দলের সুপ্রিমো একজন মহিলা, সেই দলের এক বিধায়ক কীভাবে একজন মহিলাকে ‘শয়তান জানোয়ার’ আখ্যা দেন? যে রাজ্যে মহিলাদের জন্য একাধিক আর্থসামাজিক সরকারি প্রকল্প রয়েছে, সেই রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক হয়ে কীভাবে হামিদুর এই কথা বলছেন? এত শত প্রশ্ন উঠে গিয়েছে যা শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরছে তাই নয়, প্রশ্ন ঘুরছে তৃণমূলের অন্দরেও।

Advertisement

তবে পরে কিছুটা চাপে পড়েই সুর বদলান হামিদুল। তিনি বলেন, তিনি নাকি ‘মুসলিম রাষ্ট্র’র কথা মুখেই আনেননি। বিরোধীরা তাঁর নামে অপপ্রচার করছে। তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ‘যা হয়েছে তা একদমই ঠিক হয়নি। আমি মেনে নিচ্ছি। ওই জায়গায় জাতপাত সংক্রান্ত সমস্যা হলে সালিশি সভা হয়। একে আমি বা আমার দল একদমই সমর্থন করি না। আমার নামে অপপ্রচার হচ্ছে যে, আমি নাকি বলেছি, মুসলিম রাষ্ট্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। আমি মুসলিম রাষ্ট্র কথা মুখেই আনিনি। বিরোধীরা আমার নামে অপপ্রচার করছে। আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।’ কিন্তু সেই দাবি দলের অন্দরে তাঁর বিরুদ্ধে আগুন নেভাতে পারেনি। ট্যুইটারে তৃণমূলের একাধিক গ্রুপ থেকে দাবি করা হয়েছে হামিদুলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে। এরপরেই এদিন বিকালে সামনে আসে যে দলের তরফে হামিদুলকে শোকজ(Show Cause) করা হয়েছে। সেই চিঠি হামিদুলকে পাঠিয়েছেন ইসলামপুর জেলা তৃণমূল সংগঠনের দলীয় সভাপতি কানাইয়ালাল অগ্রওয়াল। ৭ দিনের মধ্যে সেই চিঠির উত্তর দিতে বলা হয়েছে। হামিদুল জবাব দিলে তা রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠানো হবে। এরপরেই হামিদুলকে নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নেতৃত্ব।

যদিও হামিদুল জানিয়েছেন, ‘আমি এখনও কোনও চিঠি পায়নি। চিঠি যদি পাই, তাহলে তার উত্তর দেব।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে গতকাল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) ফোনে কথা হয়েছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এমনকি, ঘটনায় অভিযুক্ত নেতা তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য হলে তাঁকে বহিস্কার করার ব্যাপারেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি বলে জানিয়েছেন হামিদুল। তবে, দল থেকে শোকজ করার ব্যাপারে এখনও চিঠি পাননি বলেই দাবি বিধায়কের। যদিও কানাইলাল অগ্রওয়াল নিজে এদিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, হামিদুলকে শোকজ করা হয়েছে। এমনকি কলকাতায় কুণাল ঘোষও সেই সুরেও শোকজের বিষয়টি জানিয়েছেন। দেখার বিষয় হামিদুল কী জবাব দেন আর তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য প্রশাসন বা দলের নেতৃত্ব কী পদক্ষেপ করেন। তবে তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন, বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই হামিদুল নির্যাতিতাকে আক্রমণ শানিয়েছেন।

Advertisement
Tags :
Advertisement