দুবাইয়ে দেশের পতাকা উড়িয়ে ঘরে ফিরলেন উদয়নারায়নপুরের কলেজ ছাত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: দুবাইয়ে দেশের পতাকা উড়িয়ে ঘরে ফিরলেন উদয়নারায়নপুরের কলেজ ছাত্রী। আন্তর্জাতিক স্তরে একাধিক বিষয় ভিত্তিক যোগাসন প্রতিযোগিতায় সোনা ছিনিয়ে এনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন উদয়নারায়নপুরের কলেজ ছাত্রী সুস্মিতা দেবনাথ(Susmita Debnath) ওরফে রাই। সোমবার রাতে উদয়নারায়ণপুরের বাড়িতে এসে পৌঁছন । স্বাভাবিকভাবে খুশিতে ডখমগ উদয়নারায়নপুরবাসী।২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতবর্ষের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ার্ল্ড ফিটনেস ফেডারেশন যোগাসন স্পোর্টস ভারত আয়োজিত ন্যাশনাল প্রো এ.এম যোগাসন স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপে আর্টিস্টিক যোগাসন প্রতিযোগিতায় সোনা, ট্র্যাডিশনাল যোগাসন প্রতিযোগিতায় রূপো এবং স্লো আর্টিস্টিক যোগাসন প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জের পদক প্রাপ্ত করেছিলেন উদয়নারায়ণপুরের মাধবীলতা কলেজের ফিজিক্যাল এডুকেশন বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের পড়ুয়া সুস্মিতা দেবনাথ। জাতীয় স্তরে বাজিমাতের পরই সুস্মিতার কাছে সুযোগ আসে আন্তর্জাতিক স্তরে অর্থাৎ তৃতীয় এশিয়ান যোগাসনা স্পোর্ট কাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার। চলতি বছরের গত ২৫ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত যার আসর বসেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে।
আর সেই প্রতিযোগিতায় ভারতবর্ষ থেকে পশ্চিমবাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন হাওড়া তথা উদয়নারায়ণপুরের (Udaynarayanpur)সুস্মিতা দেবনাথ ওরফে রাই। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আবারো বাজিমাত করে দেয় সে। আর্টিস্টিক, ট্র্যাডিশনাল, এবং রিদিমিক তিনটি বিভাগেই দেশের হয়ে স্বর্ণ পদক(Gold Medel) প্রাপ্ত করেন রাই। এখানেই শেষ নয় ১৮ থেকে ২১ বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়ন রাউন্ডে দ্বিতীয় স্থান দখল করে ভারত তথা বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেন সে। বাবা পেশায় রেডিমেড পোষাক বিক্রেতা ও মা মামনি দেবনাথ পেশায় একটি বেসরকারি ব্যাংকের অস্থায়ী কর্মচারী।
মাত্র ১০বছর বয়স থেকেই যোগাসনের প্রতি ঝোঁক । সেখান থেকেই বর্তমানে প্রয়াত, শিক্ষক অরুপ মান্নার যোগাসন স্কুলে ভর্তি হওয়া। বয়স বাড়ার সাথে সাথেই যোগাসনকে প্রাত্যহিক জীবনের অভ্যাসে পরিনত করেছে সে। আর সেই অভ্যাস ও কঠোর অধ্যাবসায়ের জেরেই মাত্র ২১ বছর বয়েসে সাফল্যে শিখর ছুঁয়ে ফেলেন এই বঙ্গতনয়া। বর্তমানে গৌরাঙ্গ সরকারের কাছে যোগাসনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পাশাপাশি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকেই মাত্র ১৬বছর বয়সে 'রাই যোগা একাডেমী' নামক একটি যোগাসন শেখানোর স্কুল শুরু করে সে, সেখানে বর্তমানে মোট ১০০ জন ছাত্রকে নিয়মিত যোগা অভ্যাস করায় রাই।
মা, বাবা আত্নীয় পরিজনদের পাশাপাশি রাইয়ের এই সাফল্যে খুশি তাঁর খুদে শিক্ষানবীশরাও। মেয়ের সাফল্য প্রসঙ্গে মা মামনি দেবনাথ(Mamoni Debnath) জানান "ছোট থেকেই মেয়ের যোগাসনের প্রতি ঝোঁক। আমরা কোনোদিন এতে বাধা দিইনি। ও সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টাতেই আজকে এই সাফল্য লাভ করেছে , ও আরো বড় হোক আর জীবনে আরও সফল হোক এই ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি।" যদিও রাই জানায় “যোগা থেকেই ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে পরিবারের পাশে থাকতে চাই' -বলে জানিয়েছে সে।